এই আর্গুমেন্ট জনপ্রিয়, যারা বুদ্ধি দিয়া বিশ্বাস করতে চায় তাদের জন্য। রকমারির সোহাগ বলেন, বা হুমায়ূন আহমেদ। আমি অবশ্যই তাদের বিশ্বাস নিয়া কিছু বলি না, মানে কে কোন ধর্ম করলো। কিন্তু পাবলিক আর্গুমেন্ট তারা দিছেন, তাই এই আর্গুমেন্টের ভুয়াত্ব দেখানোর দায়িত্ব উপরে না বর্তালেও, ফ্রি টাইমের বিনোদন হিশাবে দেয়াই যায়।

ধরা যাক, কেউ এক গ্রহে গিয়া দামী ক্যামেরা দেখলেন পইরা আছে। তিনি অবাক। এই জনমানবহীন গ্রহান্তরে এত ভালো ক্যামেরা আসল ক্যামনে। নিশ্চয়ই এটা কেউ তৈরি করছে। এই আর্গুমেন্টে, তিনি বলেন, দুনিয়াতে আমরা এত কমপ্লেক্স সৃষ্টি, আমাদের নিশ্চয়ই কেউ তৈরি করছে।

বা, মিশরের পিরামিড কে বানাইছে জানা যায় না, অতএব, আমি বিশ্বাস করি গড আছে।

বা, এই লাইনের যেকোন আর্গুমেন্ট, যেটার মূল পয়েন্ট হচ্ছে, যেহেতু জানা যায় না, অতএব উনি আছেন।

আপনার কাছে প্রমাণ নাই, এইটারেই আপনে প্রমাণ ধরে নিলেন!

এই ধারায় ডনাল্ড রামস্ফিল্ডও ভাবছিলেন। আমেরিকার নিরাপত্তা সেক্রেটারি। ইরাকে মানববিধ্বংসী অস্ত্র যখন মিললো না, তখন তিনি বলছিলেন, আরে, আপনে কোন কিছুর অস্তিত্বের প্রমাণ পাইলেন না, তার মানে এইটা নাকি ঐ জিনিশের অস্তিত্ব নাই!

এবং আপনারা জেনে থাকবেন, এই লাইনেই তারা আগাইছিলেন এবং এটাকও করছিলেন।

এই বিভ্রান্তিটা যারা করে, তারা জোর দিয়া একটা কনক্লুশনে যাইতে চায়। যেমন ইরাকে অস্ত্র আছে, এই জায়গায় যাইতে চাইছিল আমেরিকা। তাই তারা প্রমাণ না পাইলেও বলছে প্রমাণ নাই তো কী হইছে, মাল জায়গামত আছে। বোমা ফুটাইলেই দেখা যাবে। অন্যদিকে, তারা যদি ইরাকে অস্ত্র নাই, এই জায়গায় যাইতে চাইত, এবং অস্ত্র যে নাই এর প্রমাণ মিলত না, তখন আবার বলত, প্রমাণ নাই তো কি হইছে, এর মানে তো এই না যে অস্ত্র আছে, অস্ত্র থাকলে তো প্রমাণ মিলত।

এটা যতটা না লজিক, তার চাইতে বেশি একটা মানসিক অবস্থা, একজনের ডেসপারেট চেষ্টা। সে ট্রু বা ফলসে যাইতে চায়। ট্রু ও ফলসের মাঝামাঝি জায়গা, জানা যাবে না, বা ভবিষ্যতে জানা যাবে, বা আংশিক জানা যাবে, এইসব বাস্তবতা সে অস্বীকার করে। চিন্তার বদ্ধতার এইখানেই সূচিত, এবং অথোরিটারিয়ানিজমেরও।

এবং ধর্ম বা গড বিষয়ে যারা এই আর্গুমেন্ট দেয়, তাদের জন্য স্যাড বিষয় হচ্ছে, ধর্ম এই লাইনের বিষয়ই না। ধর্ম হচ্ছে সমর্পণ, সমর্পণ বুদ্ধির সেক্টর না। ফলে, ধর্মের লাইনেও তাদের কোন অগ্রগতি নাই তা বুঝা যায়। একটা কথা বলছিলেন এক সূফী, স্বর্গ ও নরক তো ভোগের জায়গা, মুক্তি সে তো অনেক দূরের বিষয়! এইভাবে বলা যায়, তারা যেই লাইনে বুদ্ধি দিয়া ভাবতেছে গডরে, গড এই বুদ্ধিরই বাইরের বিষয়।

মুরাদুল ইসলাম