সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন। তার…

সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন। তার বঙ্গভবনে পাঁচ বছর বইটা পড়তেছিলাম। (লিংক মন্তব্যে)

তিনি কীভাবে সরকারী চাকরিতে গেলেন, সেই গল্প হচ্ছে, তিনি ১৯৬৮ সালে একটা গাড়ি কিনেন, ফিয়াট ৬০০। কিন্তু লাইসেন্সের জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও লাইসেন্স পান নাই।

তিনি অনেকবার অফিসে গিয়াও পান নাই।

শেষবার যখন যান, তারে অফিসার বলেন, পরীক্ষা দেন। পাশ করেন।

তখন আরেক লোক সেখানে এলেন। অফিসার ব্যস্ত হয়ে উঠলেন, স্যার আপনি এখানে কেন?

ওই লোক বললেন, লাইসেন্সের জন্য।

অফিসার বলেন, কী যে বলেন না স্যার, আপনি কেন আসতে গেলেন, ফোন দিলেই পারতেন, বাসায় পৌঁছে দিতাম। আমি আজই আপনার বাসায় পৌঁছে দিচ্ছি স্যার।

ওই লোক চলে যাবার পরে মাহবুব সাহেব অফিসাররে জিজ্ঞেস করলেন, কাহিনীটা কী? উনার পরীক্ষা লাগলো না?

অফিসার ধমকে বললেন, ধুর মিয়া! জানেন উনি কে? এসিস্ট্যান্ট কমিশনার।

মাহবুব সাহেব তখন বুঝে নিলেন, এইদেশে মানুষের জাত দুইটা, সরকারী লোক, আর বেসরকারি মানুষ।

পরে তিনি যখন রাষ্ট্রপতির চাকরি করতে লাগলেন, তখন ফোন দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাসায় নেয়ালেন। তার সহকারীকে বললেন, একজন মানুষের আর কী কী লাইসেন্স লাগে?

সহকারী বললেন।

তিনি ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া সব লাইসেন্সের জন্য ফরম আনতে বললেন। সব তিনি বাসায় বসে নিবেন। এই তার মধুর প্রতিশোধ।

আমার কাছে এই প্রতিশোধ কেবলই ব্যক্তিগত মনে হলো। ব্যক্তিগত প্রতিশোধে সমস্যা নেই, কিন্তু বেটার প্রতিশোধ হতো যদি মাহবুব সাহেব এইসব লাইসেন্সজনিত কারণে সরকারী লোক আর বেসরকারি মানুষের ভেদরেখা দূর করতে কাজ করতেন। তার কাছে তো সেই ক্ষমতা তখন ছিল, অন্তত চেষ্টা করে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল।

এটা ভালো শুনাইত, যদি এরকম হতো, যখন আমি রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারীর চাকরিতে গেলাম, এরপর থেকে আমি চেষ্টা করে গেছি যেন লাইসেন্সজনিত কারণে সাধারণ মানুষের অহেতুক কোন ভোগান্তি না থাকে।

মুরাদুল ইসলাম