শব্দ পূজা একটা প্যাগান জিনিশ। তসবিহ জইপা বা দেবতার নাম জপতে জপতে তারে বশে আনার যে প্রক্রিয়া বিভিন্ন কালচারে প্রচলিত, তা বহু পুরান। যখন একেশ্বরবাদী প্রথম ধর্ম আসলো, তখন একেশ্বর নিজের নাম প্রকাশ করতে চান নাই। অর্নবের গানের মত, তাহার কোন নাম ছিল না। দুইটা কিচ্ছা উল্লেখ করা যায়। ইহুদি ধর্মের গল্পে, ইয়াকুব নবী যখন গডের লগে কুস্তি করেন, তখন গডের নাম জিগাইছিলেন, তিনি নাম বলেন নাই। আর মুসা নবী যখন তার ধর্মে দীক্ষিত যাযাবর দিগকে নিয়া মরুভূমি দিয়া যাইতেছিলেন, তখন এক ঝোপে তার লগে গডের আলাপ হয়। তখন তিনি তারে নাম জিগান, গড নাম বলেন নাই।

ওই প্যাগান ধারা থেকে সরে আসার জন্যই এইটা। একেশ্বরবাদের একেশ্বর জানতেন নাম বললেই তারে নাম জইপা বশে নিয়া আসবে বান্দা বান্দিরা।

আমার মনে হয়, এর চাইতেও গভীর কারণ হইল, একেশ্বরবাদের ঈশ্বর সুপ্রিম নিরাকার, মনুষ্য হৃদয়ের কল্পণার বাইরের এক অস্তিত্ব হইয়া থাকতে চাইছিলেন। এইজন্যই তিনি নাম বলেন নাই। তিনি আশঙ্কা করছিলেন নাম বললে তা শব্দ পূজায় পর্যবসিত হইতে পারে।

হইছেও তাই। মানুষেরা নাম না দিয়া থাকতে পারে না। আবার বলতে পারি, এই ট্রিক জেনেসিসে ঈশ্বরই শিখাইয়া দিছেন, যখন প্রাণীকুলরে তিনি হাঁটাইয়া নিয়া গেলেন আদমের সামনে দিয়া। আর আদমরে বললেন নাম দিতে। আদম নাম দিলেন এবং প্রাণীকুলের উপর আদমের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হইল।

একইভাবে, তারা নাম দিয়া দিল ঈশ্বরের।

মুরাদুল ইসলাম