রাবণ মৃত্যুশয্যায়। রাম তার ভাই লক্ষণকে বললেন, তাড়াতাড়ি যাও ভ্রাত, রাবণের কাছ থেকে জ্ঞানাদি অর্জন করো, সে খারাপ হতে পারে কিন্তু মহাপণ্ডিত। এমন কিছু তার কাছ থেকে শিখতে পারবে যা অন্যত্র বিরল।

লক্ষণ গেলেন। পড়ে থাকা রাবণের মাথার কাছে গিয়ে বললেন, হে দানবরাজ, তুমি জীবনে যা জ্ঞানার্জন করেছ তা দিয়ে যাও, না দিয়ে মরে গেলে কেউ জানতে পারবে না। জ্ঞান প্রদান করে নিজের পাপ কিছু মোচন করো।

রাবণ কোন কথা বললেন না। মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

লক্ষণ ফিরে গেলেন। রামকে বললেন, রাবণ অহংকারী রাজা, এখনো তার দম্ভ, কিছু বলে নাই।

রাম বললেন, ভ্রাত, তুমি যখন তাকে অনুরোধ করো, তখন কীভাবে বসেছিলে?

লক্ষণ বললেন, আমি তার মাথার কাছে বসেছিলাম।

রাম হাসলেন। এরপর নিজে চলে গেলেন ও লক্ষণকে অবাক করে দিয়ে রাবণের পায়ের কাছে বসলেন। হাত জোড় করে সম্মান দেখিয়ে বললেন, লঙ্কারাজ আপনি একজন মহাপণ্ডিত। আপনার খারাপ কর্মের জন্য আপনাকে বধ করা আমার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু এখন আপনি আমার শত্রু না। জীবনে আপনার অর্জিত জ্ঞান আমাকে দিয়ে যান অনুরোধ করছি, অন্যথায় তা হারিয়ে যাবে।

রাবণ চোখ খুলে তাকালেন। বললেন, আপনি আমার জ্ঞান নেয়ার যোগ্য।

অতঃপর রাবণ তার জীবনের অর্জিত জ্ঞানের সারাৎসার রামকে দিয়ে গিয়েছিলেন।

(রামায়ণের ফোক ভার্সনে এইরকম কাহিনী আছে।)

মুরাদুল ইসলাম