খেলা সব সময়েই আগে রুল ঠিক করে নিয়ে ফাইট, যে ফাইট মানুষেরা পরস্পরের সাথে করে রিসোর্সের জন্য তার অনুকরণ। ফুটবল খেলারে যদি দেখেন, প্রাথমিক ভাবে এই খেলা ছিল বিশৃঙ্খল। কে কত বেশি বল রাখতে পারে এবং মারামারি। মানুষ যত ‘আধুনিক’ হইছে, তত নিয়ম কানুন আসছে এই খেলায়। এখন একইসাথে এটা স্পোর্ট এবং স্ট্র্যাটেজিক গেইম।

লন্ডনের ক্রো স্ট্রিটে ১৭২১ সালের এক ফুটবল খেলার ছবি

খেলার সমর্থন নিয়া যে উন্মাদনা, উচ্ছ্বাস ও ফাইট বা ফাইটের অনুকরণ তা খেলারই অংশ। একজন দর্শক এইভাবেই খেলাতে অংশ নেয়। দর্শক না থাকলে খেলার মানে নাই। ভাবেন যদি এই ফুটবল বিশ্বকাপ কেউ না দেখত, এর কোন গুরুত্ব থাকত?

খেলায় সমর্থন করতে হলে নিজের দেশ খেলতে হবে বা নিজে খেলতে হবে, এটা লজিক্যাল নয়। খেলার এসেন্সটাই এখানে ভুল বুঝা হয়। খেলা মানে সিরিয়াস ফাইট না, বরং ফাইটের অনুকরণ বা অভিনয়। বিছাল মাইরের খেলার মজা নিতে নিজে বিছাল হইতে হয় না, বা বিছাল নিজের হইতে হয় না।

ব্রাজিল আর্জেন্টিনার সমর্থন যে হয় বাংলাদেশে, খেলাধুলা পছন্দের বাইরে এর দুইটা বড় কারণ আছে, এক একাত্মতা দেখানো এবং দুই শত্রুতা প্রদর্শন।

একাত্মতা ও শত্রুতার উদযাপন করার এমন সুযোগ সচরাচর মিলে না দেশে। সম্ভবত ফুটবল বিশ্বকাপই একমাত্র এমন উপলক্ষ্য। এখানে একজন আর্জেন্টিনা সমর্থক অন্য আর্জেন্টিনা সমর্থকদের সাথে নিজের ইউনিটি, এবং ব্রাজিল সমর্থকদের প্রতি নিজের বিদ্বেষ উদযাপন করতে পারে।

প্রাচীন অনেক সমাজ ছিল যারা বাৎসরিক নানা গ্রুপ মারামারির আয়োজন করতো। সমাজরে স্থিতিশীল রাখার এটা প্রাকৃতিক উপায়। মানুষের বিদ্বেষ প্রকাশের জায়গা করে দেয়া।

ফুটবল বিশ্বকাপ স্পোর্টিংলি এটা করার সুযোগ করে দিয়ে মানব সমাজকে স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ রাখতে সহায়তা করে।

মুরাদুল ইসলাম