মাগীর পোলা বা খানকির পোলা গালি হইতে পারলে…

মাগীর পোলা বা খানকির পোলা গালি হইতে পারলে যৌনকর্মীর ছেলে কেন গালি হইতে পারবে না?

আগেরগুলার প্রমিত রূপই তো পরেরটা।

এই গালিতে আপত্তি যাদের, তাদের আপত্তি গালিটাতে না, বরং প্রমিত “যৌনকর্মী” শব্দটারে গালিতে নিয়া “দূষিত” করায়।
এই পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের সমস্যাটা হইল, মাগী যে কাজ করেন, প্রমিত ভাবে বললে, যৌনকর্মী যে কাজটা করেন, তা তো সামাজিক হিশাবে খারাপ কাজই। এইজন্যই তো উক্ত শব্দগুলা গালি হিশাবে পরিচিত সমাজে। নাকি কেউ দাবী করবেন মাগীর পেশারে যৌনকর্মীর পেশা বললে তা সামাজিক মর্যাদা অর্জন করে ফেলে?

দ্বিতীয় কথাটা হইল, গালি সব সময়ই মিথ্যা অপবাদ। যেমন মানুষ কুত্তার বাচ্চা গালি দেয়। কিন্তু সে নিশ্চিত যারে গালি দিচ্ছে সে কুত্তার বাচ্চা না, মানুষের বাচ্চাই। মাগির পোলা খানকির পোলা বা মারজুক রাসেল অভিনীত পাশা চরিত্রের মুখে যৌনকর্মীর ছেলে, ইত্যাদি গালির ক্ষেত্রেও একইকথা। পাশা চরিত্র যখন জাকিররে গালি দেয়, তখন সে কি বিশ্বাস করছিল যে আসলেই জাকিরের মা যৌনকর্মী? অবশ্যই না।

এইসব গালি সমাজে প্রচলিত কেন তা নিয়া বরং ভাবতে পারেন। যেমন মাগির পোলা, এর মানেটা কী? মাগির পোলাদের বিশেষত্বটা অমাগীর পোলাদের চাইতে?

প্রথমত, চিহ্নিত কোন বাপ থাকে না তাদের সমাজের হিশাবে, এমন ধরা হয়। এইটা অনেক আগে থেকে। প্রাচীন এথেন্সে একবার এক মাগির পোলা ঢিল ছুড়তেছিল রাস্তায়, তখন দার্শনিক ডায়োজিনিস তারে বলছিলেন, দেখিছ আবার তোর বাপের গায়ে জানি না লাগে!

মানে বুঝাইলেন, রাস্তায় এত লোকের মধ্যে কোনোটা তর বাপও হইতে পারে।

তাহলে, চিহ্নিত বাপ না থাকাটা সমাজে সমস্যার। এইজন্য গালি হইছে জারজ। আমার মনে হয়, যেটা আগে গালি বিষয়ক এক লেখা লেখছিলাম, মনে হয় যে, এগুলা এক্সক্লুড করার গালি। মানে, মাগির পোলা, তুই ভিন্ন, তুই আমাদের কেউ না। আমাদের বাপ আছেন চিহ্নিত, গর্বের বিষয়। এই যে এক্সক্লুড করা, ভিন্ন বানাইয়া দেয়া, এটা অন্যান্য অন্যায়ের জায়গা করে দেয়। ভিন্নরেই মানুষ দমন করতে উৎসাহ ও নৈতিক প্রণোদনা পায়।

  • যৌন কর্মীর ছেলে গালিতে আপত্তি তুলতে হলে, মাগির পোলা গালিতেও আপত্তি তুলতে হবে। আলাদাভাবে যৌন কর্মীর ছেলে গালিতে বেশি আপত্তিজনক হয় না।

মুরাদুল ইসলাম