মসলার বিজ্ঞাপনে মূল চিন্তার জায়গা হলো মসলাকে বেশী…

মসলার বিজ্ঞাপনে মূল চিন্তার জায়গা হলো, মসলাকে বেশী প্রাধান্য দেয়া হবে না রাঁধুনীটিকে?

মসলাকে বেশী প্রাধান্য দিলে মানসিকভাবে রাঁধুনীরা এতে ডি-মোটিভেটেড হবেন। মসলারে এমন এক ম্যাজিক ওষুধ হিসেবে দেখালেন যে তা ছিঁটাইয়া দিলেই রান্না সুস্বাদু হয়, এমন হলে রাঁধুনীকে অগুরুত্বপূর্ন করে তোলা হয়।

মসলার বিজ্ঞাপনে বলতে হবে মসলাটি খাঁটি, ভালো ইত্যাদি; কিন্তু রান্নাটি সুস্বাদু হবে রাঁধুনী আপনার গুণে। মসলা এখানে সাহায্যকারী।

মসলারে বেশী হিরো বানানোর খারাপ দিক হলো মসলা তো আর মসলাকে কিনবে না। কিনবেন রাঁধুনীরা।

আর রাঁধুনীরা চান এটা শুনতে যে তাদের রান্নার গুণেই খাবার সুস্বাদু হয়। নট ফর মসলা।

বিজ্ঞাপনের গল্পে রাঁধুনীর গল্প দেখাতে হবে। টার্গেট অডিয়েন্সের উপর নির্ভর করে, তার রান্না বিষয়ক অবাস্তব ডেজায়ারটির রূপায়ণ। যেরকম সৌন্দর্য বা প্রসাধনীর পণ্যগুলা করে থাকে।

সে ওইরকম হতে পারবে কি পারবে না, সেটা বিষয় না, বিষয় হল, সাইকোএনালিসিসের সেই ইনসাইট, সে তো ওই আদর্শ রূপটা চায় না, বরং এই চাওয়াটারে চায়। ফলে, এই চাওয়াটা চাওয়াইয়া সেই চাওয়া চাওয়ির মধ্যে পণ্যটারে কোনভাবে ঢুকাইয়া দেয়াই হইল বিজ্ঞাপনের ম্যাজিক।

আপনার মসলার বিজ্ঞাপন ব্যর্থ হবে যদি টার্গেট অডিয়েন্সের চাওয়াটারে ধরতে না পারেন। ধরা যাক আপনি আপনার কুইক মিক্স মসলার জন্য টার্গেট করতেছেন ৩৫ থেকে ৪০ বছরের নারীদের, যারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিত ও চাকরি করেন। তাদের সংসার বিষয়ক চাওয়াতে শ্বশুর শাশুড়ি যদি না থাকেন, এবং আপনার বিজ্ঞাপনের গল্পে আপনি দেখান নারীটির রান্নায় শ্বশুর শাশুড়িসহ সবাই খেয়ে বাহবা দিচ্ছেন, তাহলে প্রকৃতপক্ষে আপনে আপনার অডিয়েন্সদের একটা নাইটমেয়ার দিলেন।

মুরাদুল ইসলাম