তথাকথিত অনেক নাস্তেকেরা কুরবানির টাইমে পশু প্রেম দেখান, এর বিরোধিতা করতে গিয়া ফেসবুকের অনেক মুসলিমরা যেই আচরণ করেন, যেন মনে হয়, এই পশু হত্যার আয়োজনে কোন ক্রুয়েলটি নাই!

কিন্তু, ক্রুয়েলটি তো অবশ্যই আছে। পশুরে আপনে যে হত্যা করতেছেন, এই পশুর জন্য মায়া থাকতে হবে। মায়া থাকলে, তারে হত্যার আয়োজনে মন আর্দ্র হবে, এবং সেই লাইনেই আসবে স্যাক্রিফাইসের ফিল। ঐটাই কুরবানির মেসেজ, আপনে কত হিংস্রভাবে, কোন নাস্তেক বা আস্তেকরে দেখাইতে কেমনে গরু খাসি হত্যা করতেছেন, কত হিংস্রতা করলেন, কী আত্মতৃপ্তি পাইতেছেন, তা কোরবানি না।
রাসেল ক্রো অভিনীত আরোনোফস্কির যে নোয়াহ ফিলিম, ওইটাতে নবী নূহ (আঃ) এর কাহিনী আছে কীয়ের্কেগার্ডিয়ান ভাবে। নূহের গল্প এমনিতে যে পড়েন, বানাইলেন তিনি বিরাট নৌকা। আল্লাহ মহা প্লাবণ দিলেন। খারাপেরা মারা গেল। জোড়ায় জোড়ায় প্রাণী নিয়া নূহ নৌকায় চড়ে বেঁচে গেলেন। এই গল্প, এবং এইভাবে বুঝা অন্য একটা মিথের হিরোর গল্পের মতোই।

কিন্তু যদি ভাবেন নবী নূহ যখন প্লাবন দেখলেন, এমন প্লাবন পৃথিবীর মানুষ আগে দেখে নাই। ভয়াবহ বর্ষণ এবং জলস্রোতের তাণ্ডব। প্রাণেরা মারা যাইতেছে, তাদের আর্ত চিৎকার শোনা যায়। কিন্তু নবী তাদের নৌকায় তুলতে পারেন না। তার দয়ার হৃদয় বলে তুলে নিতে, কিন্তু তিনি আল্লাহর আদেশের বাইরে যাইতে পারেন না। এইখানে তার একটা দ্বিধা হয়, যেই একই দ্বিধা নবী আব্রাহামের ছিলো, যখন তিনি তার পুত্র আইজ্যাকরে কুরবানি দিতে যান আল্লাহর নির্দেশে, খ্রিস্টীয় বাইবেল এর কাহিনী অনুযায়ী, কিকেগার্ডের ব্যাখ্যায়। মায়া ও আল্লার আদেশের মধ্যে আল্লার আদেশ জয়যুক্ত হয়, তখনই সেটা স্যাক্রিফাইস হয়ে যায়। ফেরেশতা আইসা আক্ষরিক কুরবানিটা বন্ধ করে দেন, কারণ অলরেডি কুরবানি কবুল হয়ে গেছে। আল্লাহ তোমার অন্তর দেখেন, বান্দা, উপলব্ধি করো!

মায়া যদি সরাইয়া নেন এখান থেকে, তাহলে স্যাক্রিফাইসের মাহাত্ম্য থাকে না। স্যাক্রিফাইসই হয় না।

মুরাদুল ইসলাম