ধৃতরাষ্ট্র বললেন শুদ্রার ঘরে জন্মানো মহাপণ্ডিত বিদুরকে &ldquo…

ধৃতরাষ্ট্র বললেন শুদ্রার ঘরে জন্মানো মহাপণ্ডিত বিদুরকে, “আর কী জ্ঞান আছে বিদুর, আমাকে শোনাও।”

বিদুর বললেন, “সনতকুমার বলেছেন মৃত্যু বলে কিছু নাই। তবে এই গুঢ়তত্ত্ব তার কাছ থেকেই জানতে হবে আপনার।”

ধৃতরাষ্ট্র বললেন, “কেন, তুমি কি জানো না?”

বিদুর বললেন, “আমি শুদ্রার ঘরে জন্মেছি মহারাজ, তাই জানলেও প্রকাশ করতে পারব না। ব্রাহ্মণকূলে জন্ম নিলে, অতি গুঢ়তত্ত্বও প্রকাশ করা যায়, দেবতাদের নিন্দনীয় হতে হয় না।”

এখানে বিদুর জ্ঞানী হয়েও জ্ঞান প্রকাশের ঝামেলাটা দেখালেন। অর্থাৎ পাণ্ডিত্যের অধিকার তখন কেবল জন্মসূত্রে কিছু লোকের কাছেই থাকতো।

আধুনিক কালে এটি গিয়েছিল একাডেমীতে। সত্যিকার অর্থেই কিছু পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন ও আছেন একাডেমীতে। কিন্তু পরে ব্রাহ্মণদের মতো অবস্থা হওয়ায়, একাডেমিকেরা একাডেমিতে গিয়েই নিজেরে পণ্ডিত ভাবতে শুরু করে, যেমন ব্রাহ্মণকূলে জন্ম নেয়া অযোগ্য সন্তানও ভাবতো।

পণ্ডিতি অর্জনের পথ পরিশ্রমসাধ্য, কঠিন, এবং এটা নিরন্তর চলতে থাকে। সেই পথে আর কয়জন যেতে চাইবে যখন সে জন্মসূত্রেই বা একাডেমিতে গিয়েই নিজেরে পণ্ডিত বলে দেখাতে পারে।

একাডেমীর বাইরে থাকা পন্ডিতদের একটা বাঁধা থাকে পাণ্ডিত্য প্রকাশে। শুদ্রার ঘরে জন্ম নেয়া মহামতি বিদুরের মত তাদের অবস্থা। যদিও আধুনিক দুনিয়ার সবচে বড় চার মহা প্রভাবশালী ব্যক্তি ডারউইন, ফ্রয়েড, মার্ক্স ও আইনস্টাইন একাডেমিকস ছিলেন না, পণ্ডিত ছিলেন।

মুরাদুল ইসলাম