লোককথার গল্প মিথের গল্প যেগুলা মুখের কথায় শত…

লোককথার গল্প, মিথের গল্প যেগুলা মুখের কথায় শত শত বছর ধরে চলে আসছে, এইগুলার উদ্দেশ্য বিনোদন ছিল না। বিনোদনের জন্য, এমনকী কোন মরাল মেসেজ দেয়া এইগুলা উদ্দেশ্য হিশাবে যদি থেকেও থাকে, ছিল মাইনর। মূল উদ্দেশ্য হিউম্যান ন্যাচার সম্পর্কে মানুষের সমন্বিত বুঝ, তারা কী বুঝেছিল, এবং সেই হিশাবে কিছু সতর্কবার্তা দেয়া হইছে গল্পের আকারে। এই কারণে চিন্তা করলে দেখা যায়, প্রায়ই উইয়ার্ড জিনিশ ঘটে এসব গল্পে, মনে হয় কোন ব্যাখ্যাই যেন নাই।

ঠাকুরমার ঝুলির গল্প ধরেন। ঘুমন্ত পুরী। এক রাজার কুমার, সুন্দর দেখতে, রাজ্যের আলো, চারিদিকে তার গুণ। কিন্তু সে তার বাপের রাজ্য দেখা বাদ দিয়া দেশভ্রমণে যাইতে চায়।

রাজা অনেক চর দিতে চাইলেন সাথে, রানী মণি মাণিক্য। কিন্তু কুমার কিছুই নিল না। একা গেল।

গেল এক রাজ্যে যেখানে সবাই ঘুমে। কোন শব্দ নাই, নিস্তব্দ সব। অনিন্দ্য সুন্দর রাজকুমারীর দেখা পাইল, সেও ঘুমে। রাজকুমারীরে দেইখা তার কত বছর চলে গেল।

অতঃপর, এক পর্যায়ে সোনার কাঠি মাথায় ও রূপার কাঠি মাথায় ছোঁয়াইলে রাজকুমারী জাগল। সমস্ত রাজ্য জাগল। রাজ্যের রাজা খুশি হয়ে রাজকন্যা রাজত্ব দিয়ে দিলেন।

রাজকুমার ফিরে এলো নিজ রাজ্যে।

তো, এই গল্প কী বলে আসলে?

তুমি রাজকুমার, তোমার যাই থাক, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি নিজে তোমার সোনার কাঠি রূপার কাঠি না পাইবা, ততক্ষণ তোমার পূর্ণতা আসবে না। তুমি তোমার ফুল পটেনশিয়ালে যাইতে পারবা না। যাইতে তোমারে রিস্ক নিতে হবে। তাও একা একা নিতে হবে। তাইলেই তুমি পাইবা সিক্রেট, তুমি নিজেরে পাইবা, বুঝবা যে তোমার চিন্তার প্যাটার্ন কেমন, প্যাশন কী, কী চাও তুমি, শক্তির জায়গা কোথায়। এইসবই তোমার রাজ্যজয়।

এই পর্যায়ে যাইতে তোমারে তোমার কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হইতে হবে। তা না হইলে রাজকুমার, তুমি অনস্তিত্ব থাকবা, ঠাকুরমা এই গল্পই বলেন, এই সাবধানবানী দেন। এবং গল্পটা ভিন দেশের কোন রাজকুমার নিয়া না, শুরু থেকেই এই গল্পের রাজকুমার সাধু, আপনেই।

মুরাদুল ইসলাম