মানুষ কেন ডাইভারশনের আলাপ করে যে দেশে এত…

মানুষ কেন ডাইভারশনের আলাপ করে? যে দেশে এত এত খারাপ জিনিশ হইতেছে, সীতাকুণ্ডে আগুন ইত্যাদি, এর মাঝে অভিনেতা অভিনেত্রীর গসিপ নিয়া মানুষ বিজি হইয়া গেছে, ইত্যাদি। তাদেরকে ডাইভার্ট করতে নাকি এটা করা হইছে।

কখনো এটা হইতে পারে, যেমন যেকোন কন্সপিরেসি থিওরি, ষড়যন্ত্র তত্ত্বরে কিছুটা সম্ভাব্যতায় রাখতে হয়, শতভাগ নাকচ করে দিলে তা পাওয়ারফুল হয়ে উঠে।

কিন্তু এই ডাইভারশনের চিন্তা ভুয়া।

যারা এইটা ধারণা করেন, তাদের এক ডিফেন্স মেকানিজম। তারা মনে করেন, মানুষেরা আসলেই ওইসব ঘটনা নিয়া কেয়ার করে। কিন্তু মানুষের অন্যরকম ব্যবহার যখন সামনে আসে, তখন আরেক মহাশক্তিমানের কল্পনা করে নিতে হয়, যিনি এই ভালো অবুঝ মানুষদের ডাইভার্ট করে গসিপে নিয়া গেছেন।

কিন্তু প্রকৃত পক্ষে, মানুষ এগুলা কেয়ার করে না। সীতাকুণ্ডের আগুন বা করাপশন। যখন দেখে তার খারাপ লাগে, কিন্তু যেইরকম দৃশ্যায়ন হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়, এইরকম না। মানুষের ওই অনুভূতি নাই এখন, কারণ তার কাছে আনন্দের অনেক অপশন আছে।

এইরকম ঘটনায়, মানুষ নিজেরে প্রশ্ন করে, তার খারাপ লাগতেছে না কেন, যেরকম খারাপ লাগার কথা, ওইরকম লাগতেছে না কেন। ধরা যাক প্রিয়জন মইরা গেছে, সবাই কানতেছে, সেও কানতেছে, কিন্তু মনে মনে প্রশ্ন করে, তার যেমন খারাপ লাগার কথা ওইরকম লাগতেছে না কেন? এই সন্দেহ তার কান্নারে বাড়াইয়া দেয়, সে সতর্ক ভাবে দেখে অন্যান্যদের কান্না, কারো চাইতে তার কান্না যেন কম না হয়।

ফলে, একটা থিয়েটার হয় কান্দনের, দুঃখের।

কিন্তু এর মানে এই না যে, ওই বিষয়টা নিয়া সে কেয়ার করে। কান্নারেই কেয়ার করা বলে না। কেয়ার করা হইল ঐ কজের জন্য আপনে কতটুকু রিস্ক নিতে পারেন, কতোটুকু স্যাক্রিফাইস করতে পারেন।

তো, কান্নার থিয়েটার আজীবন চলতে পারে না। মানুষের দমবন্ধ লাগে কিছুদিন পরেই। সে খুঁজতে থাকে ফাঁক, কোনোদিক দিয়া বের হবে। সাধারণ নিয়মেই কয়দিন পর পর যেমনে হাস্যকর বা অদ্ভুত কিছু ঘটে, এইরকম একটা কিছু ঘটল, তারা এই ফাঁক দিয়া বের হয়ে যায়।

দুঃখের কোন ঘটনার পর এই যে, এইরকম কোন গসিপে বা হাস্যকর আলাপে তাদের বেরিয়ে যাওয়া, এইটাতে তারা মুক্তির আনন্দ পায়, এবং এই এনগেইজমেন্টেই তার প্রকৃত রূপ।

মুরাদুল ইসলাম