বাংলা ছবির নায়কেরা ভাল ডিসিশন মেকার

 

এক ধরনের বাংলা ফিল্মে দেখা যাইত নায়ক গরীব, প্রেম করে ধনী আহমদ শরীফের মেয়ের লগে। আহমদ শরীফ স্বাভাবিক ভাবেই তা মেনে নেন না। তিনি তখন একবার নায়করে ডাইকা পাঠান আর ব্রিফকেস ভর্তি টাকা দিয়া বলেন, আমার মাইয়ার জীবন থেকে চইলা যা।

কিন্তু বুদ্ধিমান নায়ক তা নেয় না। এখন অনেকে বলবেন নায়ক প্রেমের টানে কাজটা করছে, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে বাজে সিদ্ধান্ত। খুব সম্ভবত, দেশের মানুষেরা এই অবস্থায় পড়লে টাকা ভর্তি ব্রিফকেসই নিতেন।

আমাদের নায়ক আসলে বাজে সিদ্ধান্ত নয়, ভালো সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। অর্থনৈতিকভাবে বর্তমানের অল্প লাভের চাইতে ভবিষ্যতের বেশী লাভ তিনি দেখেছেন। তার সাথে “লাভ” নামের পপুলার বিষয়টাও আছে যাকে হিসাবের বাইরে রাখা যায়। নায়কের এই ভবিষ্যত দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া বাঙালী বৈশিষ্ট্যের বাইরে। জাতিস্বত্তার দিক থেকে বাঙালী নগদ লাভের পক্ষে, ইহকালপন্থ (বুদ্ধিজীবি ও চিন্তক অধ্যাপক আহমদ শরীফের লেখায় এই বিষয়ে আলোকপাত আছে। বইয়ের নাম কালিক ভাবনা।)।

নায়কের এই সিদ্ধান্তের ফলে পরবর্তীতে সে নায়িকা পায়, নায়িকার বাপ আহমদ শরীফের বিশাল বিত্ত বৈভব সবই পায়।

ভবিষ্যতের দিকে দেখে সিদ্ধান্ত নিলে মানুষ যৌক্তিক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়, এর জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ নায়কেরা কত দেখাইয়া গেলেন। মানুষ বুঝল না।

(জানুয়ারী ১৪, ২০১৭)

মুরাদুল ইসলাম