মহাভারতে “পলিটিক্স” টাইপের রাজনীতি আনছে এক জেলে ও জেলে কন্যা।

আগে সম্ভবত ছিল এইরকম, রাজার নীতি রাজনীতি।

কিন্তু জেলে দাশরাজরে যখন রাজা শান্তনু গিয়া বললেন, আই ওয়ান্ট টু ম্যারি ইওর ডটাড়।

তখন দাশরাজ বলে, রাজন, এইটা কেমনে হয় যদি না আমার কন্যার পোলাপান হস্তিনাপুরের রাজা হয়। যেহেতু আপনার আরেক পোলা আছে, গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম।

রাজা মানেন না। পরে ভীষ্ম গিয়া দাশরাজরে বলেন, ঠিক আছে আমি সিংহাসন দিলাম ছাইড়া। যা বাল। কোন রাজা জানি প্রেমের জন্য ছাড়ছিল সিংহাসন। আমি ছাড়লাম বাপের জন্য।

দাশরাজ তার মাইমলি পলিটিক্সে বলে, তা ঠিক আছে, সেরা কথা। সু পুত্র তুমি। বাট, তুমি তো বিয়া করবা। আর এখনো কনডম আবিষ্কার হয় নাই। তো, তোমার পোলাপান হবে। এরা তো রাজা হইতে চাইবে, যেহেতু লিগ্যালি তাদেরই অধিকার থাকবে। তার মানে আমার কন্যা সত্যবতীর উত্তরসুরীরা রাজা থাকতে পারবে না।

রাজার পোলা ভীষ্ম “পলিটিক্সের” প্যাচে পইড়া গেল। সে বলল, বাল যা ঠিক আছে। আমি গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম আকাশ বাতাস ও দেবতাকূল স্বাক্ষী রাইখা দিলাম এই ঘোষণা যে, জিন্দেগীতে বালের সেক্সই করব না। বিয়াও করব না।

দাশরাজ খুশি হইয়া মনে মনে বলে এইটাই তো চাইছিলাম আমি।

এইভাবে পলিটিক্স আসলো রাজত্বে। আর সেই পলিটিক্স বাড়তে বাড়তে গিয়া সত্যবতীর বংশধরদের মধ্যে কূলবিণাশী মহাযুদ্ধ। যেই ঝামেলা এড়াইতে চাইছিল দাশরাজ, সেই ঝামেলাতেই পড়তে হইছিল তাদের। আর আনুসাঙ্গিক ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণ-প্রকৃতির বিনাশ।

ছোটলোকের পলিটিক্স এইরকম হয় বলেই মনে হয়, মানে এইটা যদিও একটা বর্ণবাদী কুমন্তব্য বলে দৃশ্যমান হইতে পারে। বাট পয়েন্ট হইল এখানে, অভিজাতদের একটা শিক্ষা দীক্ষা থাকে বা ঐ ধরণের বুঝ থাকে আশা করা যায়।

এইটা রাজ্য শাসন, পরিবেশ, শিক্ষা, অভিজ্ঞতা নানা কারণে হইতে পারে। নেলসন ম্যান্ডেলা এইজন্য ক্ষমতা পাইয়াই হোয়াইটদের সকল পজিশন থেকে সরাইতে যান নাই। কারণ তিনি জানতেন দেশ চালাইতে হইলে এদের জ্ঞান বুদ্ধি ও স্কিল লাগবে। চেতনার চুদনে পইড়া কালোদের বসাইয়া দিলে দেশ টিকানো যাবে না।

এই শুনতে রেসিস্ট মনে হওয়া মন্তব্যের আরেকটু বিস্তারে গেলে, মনে হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে যত ছোটলোকদের হাতে ক্ষমতা গেছে তত প্রশাসন করাপ্ট হইছে।

একসময় যারা চেয়ারম্যান ছিলেন, এদের এতো অভিজাততা ছিলো যে, এরা চুরি করতেন না ইজ্জ্বতের ভয়ে। কারণ ধরা পড়লে লোকে বলবে অমুক বংশের তমুক, চেয়ারম্যান হইয়া চাল চুরি করছে। এই বাস্তবতাটা দ্রুত চেইঞ্জ হইছে, এবং প্রশাসনে যে স্বার্থের “পলিটিক্স” ঢুইকা গেছে, এই বিষয়ে মহাভারতের ঐ “পলিটিক্স” শুরুর ব্যাপারটারে প্যারালালি নিয়া ভাবা যায়। ছোটলোক তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার স্বল্পতার জন্য সামগ্রিক কল্যাণরে বাদ দিয়া শর্ট সাইটেড হইয়া কেবল নিজেরটাই দেখতে থাকে, ফলত চালচুরি গমচুরি এবং ইত্যাকার নানাবিদ প্রশাসনিক দুর্নীতি।

আর চলতে চলতে ব্যাপারটা নর্ম হইয়া গেলে, তখন কুরুক্ষেত্র, ঐ সিস্টেমে যেই যাবে তার চোর না হইয়া থাকা টাফ, কারণ এইসকল চুরি ও দুর্নীতি ধাপে ধাপে, ভাগ বাটোয়ারার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

মুরাদুল ইসলাম