ধর্মের কাজ মানুষরে &ldquo স্পেশাল&rdquo ফিল দেয়া। ধর্মের…

ধর্মের কাজ মানুষরে “স্পেশাল” ফিল দেয়া। ধর্মের মাধ্যমে মানুষ অনুভব করে সে অগুরুত্বপূর্ণ না।

নীতশে মনে করতেন সাধারণ লোকদের অনুগত রাখার এক প্রক্রিয়া হচ্ছে প্রার্থনা। এটা পুরোহিতদের বানানো।

মানুষদের এই নিয়ন্ত্রণ ও অনুগত রাখার মডেলে চিন্তা করলে ধর্ম ও প্রার্থনা বুঝায় সমস্যা হবে।

প্রার্থনা অনুগত রাখতে বাইরের কোন মেকানিজম যতটা, তার চাইতে বেশি মানুষের “স্পেশাল” হবার প্রক্রিয়া। প্রার্থনায় ব্যক্তি সর্বশক্তিমান এনটিটির সাথে নিজের কানেকশন অনুভব করে। আর যার সর্বশক্তিমানের সাথে, এই দুনিয়া ও সকল কিছুর মালিকের সাথে কানেকশন আছে, সে ‘বিশেষ’ হয়।

এর বিপরীতে কি মডেল আপনি তারে দিবেন? দুনিয়া মহাবিশ্বের এক ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র ভাসমান নাথিং, তুমি আরও বড় নাথিং। তোমার সুখ দুঃখ হাসি কান্না মহাবিশ্বের বিশালতার সাপেক্ষে নাথিং। এইসব মানুষ নিবে? যেখানে ধর্ম তারে বলছে, তুমি দুনিয়ার কিং, সর্বশক্তিমানের অনুসারী, তুমি খলিফা, তুমি এত গুরুত্বপূর্ণ যে তোমার দুই কান্ধে দুই ফিরিশতা, তোমার সব রেকর্ড হয়, বিপদে আপদে সুখে দুখে তোমার দিকে হাত বাড়াইয়া আছেন সর্বশক্তির আঁধার। মুর্শিদ ধরে আছেন খাণ্ডার, অবুঝা বালক তোমার নৌকা ডুবিবে না।

মানুষ কোনটা নিবে? অবশ্যই ধর্মেরটা।

ধর্মের সমালোচনার নীতশের মডেলের চিন্তাই জনপ্রিয়। এখানে ধরা হয় ধর্ম নলেজের সমস্যা। মানুষ চিন্তা করতে পারে না তাই ভেড়ার পালের মত ধর্মানুসরণ করে।

এটা ঠিক না। কারণ ধর্ম নলেজের বা তত্ত্বের সমস্যা না। ধর্ম নিজেই নলেজ, যেমন কোন এক এনটিটি আছেন যিনি তোমাকে স্পেশাল করে পাঠিয়েছেন, তাকে এইভাবে এইভাবে ডাকলে এই এই হবে, ফলত লোকে এটা মানে। এবং এই কারণে আরও তত্ত্ব, তথ্য, ফ্যাক্ট দিয়ে ধর্মানুসরন থেকে মানুষরে সরানো যাবে না। যদিওবা সরে, আরেক ধর্মে যাবে, সেটা নয়া এথিজমের নামে হোক বা অন্য কিছু।

ইতিহাসে, ধর্মান্তরের বিষয়গুলা যদি দেখা হয়, এর কতটা হইছে আলোচনা বা নলেজের মাধ্যমে? খুব কম। বেশিরভাগই হইছে এক্ট এর মাধ্যমে, শক্তি, তরবারি ক্ষমতা, দখল ইত্যাদির মাধ্যমে।

আব্রাহামিক রিলিজিয়নে বলা হয় যে শয়তানের কথা, সে বান্দাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে বুঝাতে যায় না যে ধর্ম ভালো না খারাপ। তাহলে সে ধর্ম থেকে সরায় কীভাবে?

কাজের মাধ্যমে, সে কাজ দেয়। শয়তানের যে ধারণা ও তার যে কার্যপদ্বতির বর্ণনা আছে, মনে বিভিন্ন চিন্তা উদ্রেক করে, ব্যস্ত রাখে অন্য কাজে। গানে আছে না, নামাজ আমার হইল না আদায়। গাতক কত কাজের কথা বলেন যে কারণে তার নামায আদায় হইল না। যারা নামায পড়েন না, তারা কি ধর্ম অবিশ্বাসের কারণে পড়েন না? না, কাজের ব্যস্ততায় পড়েন না।

শয়তান যে আপেল বা গন্ধম ফল খাওয়াইছিল, ওইটা ছিল কাজ। কাজ করাইছে। বলা হয়, এর পরে জ্ঞান হইছে আদমের ইত্যাদি। আসলে সেটা বিষয় নয়। বিষয় হলো, আদমের এক্ট তথা কাজের শুরু এই ফল ভক্ষণের মাধ্যমে, এবং এর দ্বারাই তিনি তিরোহিত হন আব্রাহামিক ধর্মের ইডেন গার্ডেন থেকে তথা ধর্ম থেকে।

মুরাদুল ইসলাম