দ্য ডিক্টেটরস হ্যান্ডবুক

দ্য ডিক্টেটর’স হ্যান্ডবুকের মূলকথা বুঝা দরকার। এটা বুঝা দরকার ডিক্টেটরশীপে ও গণতন্ত্রে ক্ষমতা কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে। এখানে রুলাররা রুলে চলে না, বরং ক্ষমতার রুলেই রুলার চলে। এইজন্য ইউটোপিয়ান স্বপ্ন দেখানো বিপ্লবীরাও বাজে ডিক্টেটর হয়। তারা সিংহাসন নেয় চালাতে, কিন্তু সিংহাসনই তাদের চালায়।

কেউ একা শাসন করতে পারে না। তার কিছু কি (key) পিপল লাগে। এই কি পিপলই তার ক্ষমতায় থাকার জন্য জরুরী। এরা তার হয়ে কাজ করে। আইন বানায়, প্রশাসনের কাজে থাকে, আইন শৃঙ্খলার কাজে থাকে। তাই তার প্রধান কাজ থাকে কি পিপলরে খুশি ও লয়াল রাখা।

গণতন্ত্রে আরেক ধরণের কি থাকে, যারা বিপুল সংখ্যক লোক, তার পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু এদের সে পুরা খুশি রাখতে পারবে না। এরা বিশাল ও এদের চাহিদা অনেক। তাছাড়া এরা পরবর্তীতে অন্য পক্ষকে সমর্থন দিতে পারে। এবং এদের জন্য খরচ করা কাজের (হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি নির্মান) সুফল অন্য দল ক্ষমতায় আসলে নিতে পারে।

এদের জন্য খরচ করা হচ্ছে শাসকের জন্য অপচয়। তাও সে অল্প খরচ করে এদের খুশি রাখে। এদের সে ভাগ ভাগ করে, এবং কিছু ভাগকে ভর্তুকি ও অন্যান্য সুবিধা দেয়। যেমন কৃষিভর্তুকি, বা অন্য পেশাজীবীদের দেয়া সুবিধা, কোটা।

এছাড়া, এই জনগণ যাতে প্রোডাক্টিভ কাজে নিয়োজিত হতে পারে এজন্য শাসককে খরচ করতে হয়। কারণ প্রোডাক্টিভ কাজ বেশী হলে ট্যাক্স বেশি হবে। ট্যাক্স বেশি হলে সে তার মূল কি পিপলদের বেশী অর্থ দিয়ে খুশি রাখতে পারবে।

এছাড়াও কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেও তার খুশি রাখতে হয়। কারণ প্রভাবশালী ব্যক্তির কথার প্রভাব থাকে জনগণের উপরে। তাকে হাতে রাখলে অনেক ভোট নিশ্চিত। এজন্য ডিক্টেটরের মত সরাসরি টাকা না দিলেও চুক্তি, পুরস্কার, সম্মান বা অন্য কোন ভাবে সুবিধা সে দিয়ে থাকে।

বিপ্লবে ক্ষমতা থেকে জনগণের এক দল ডিক্টেটরকে সরিয়ে ফেললো, এমন ক্ষেত্রে ভেতরের চিত্র হলো সেনাবাহিনী তা হতে দিয়েছে। এখানে বাইরে থেকে দেখলে জনগণের এক অংশ ক্ষমতা নিয়েছে। কিন্তু মূল চিত্র হলো শাসকের প্রধান কি পিপলরা তার প্রতি সন্তুষ্ট ছিল না। তাই তারা তাকে সরিয়ে দিয়ে নতুন শাসক বসিয়েছে। জনগণের বিপ্লব এখানে সামনে দৃশ্যায়ন হয় কেবল।

নতুন শাসককেও পুরাতন শাসকের নিয়মে চলতে হয়। তার নতুন কি পিপলদের সন্তুষ্ট করে চলতে হয়। তাদের সাথে নিয়ে বিপ্লব করেছিল তাদের সম্পদের ভাগ দিতে হয়।

এভাবেই ক্ষমতা তার নিয়মে চলে। 

মুরাদুল ইসলাম