আধুনিক শিক্ষার হিসাব নিকাশ

আমেরিকান মিলিনিয়ার গ্র্যান্ট কার্ডন বলিয়াছেন ‘অধিকাংশ লোকেরই উচ্চশিক্ষা নেয়া ঠিক না।’ কথাটা সত্য। তিনি তার কথার পক্ষে দারুন কথা বলিয়াছেন, যা আমি হেথায় উল্লেখ করি বাংলা ট্রিবিউন পত্রিকার সূত্রে; তিনি বলিয়াছেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার সন্তানদের বলেছি, তারা তিনটি কলেজে পড়ালেখা করতে পারে। তারা এমন নামি কলেজে পড়ালেখা করতে পারে যেখানে তারা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারবে। গুরুত্বপূর্ণ হলো— বুশ পরিবার কোথায় যাচ্ছে, ওবামা পরিবার কোথায় যাচ্ছে? গুরুত্বপূর্ণ হলো— বড় বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কোথায় যাচ্ছেন।”

“আমি চাই যে আমার সন্তানেরা কলেজে যাক। তবে সেটা শিক্ষা গ্রহণের জন্য নয়। আমি চাই তারা কলেজে গিয়ে মানুষের সঙ্গে মিশতে থাকুক, তারা বড় বড় প্রভাবশালীদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকুক। আমি বলব সেই পুরনো প্রবাদটি, ‘তুমি কী জানো সেটা নয়, তুমি কাকে কাকে জানো সেটাই গুরুত্বপূর্ণ’।

কার্ডন সাহেবের এই কথার দিকে অবিশ্বাসী ভঙ্গিতে হয়ত কেউ কেউ তাকাইতেছেন। তাদের জন্যও আমার সংগ্রহে এনাদার উক্তি আছে। তা বলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রকাশ হইয়াছে বিডি নিউজ২৪ নামক পত্রিকায়। শেখ হাসিনা বলেন,

“আমেরিকার অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে এসে এসে সব সময় থ্রেট করত- ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদ থেকে সরালে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ হয়ে যাবে।”

“অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি ব্লেক (রবার্ট ব্লেক) এল… ওই একই কথা। হিলারি ক্লিনটন আমাকে ফোন করল। সেখানেও একই কথা। এমনকি আমার ছেলে জয়কে তিনবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে ডেকে নিয়ে গেল। ওকে বলল, ‘তোমাদের অসুবিধা হবে। হিলারি এটা সহজভাবে নেবে না। তোমার মাকে বোঝাও’।”

আমেরিকান এই থ্রেটগুলি সেই সময়ে আসিয়াছিল যখন বয়সের কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবসায়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পথ হইতে হটানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।

কার্ডন সাহেব যাহা বলিয়াছেন, অর্থাৎ কোন কোন প্রভাবশালীর মাইয়া এবং পোলা আপনার পরিচিত আছে তাহাই আধুনিক শিক্ষার মুল বিষয়; গুরুত্বপূর্ন এই কথা। এই জল, হাওয়া ও অধিক জনগণ সম্বলিত বঙ্গে খাড়াইয়াও আমরা তা প্রত্যক্ষ করিতে পারিলাম।

মুরাদুল ইসলাম