ফেইসবুক, দাস ব্যবসা ও এভিইলাভিলিটি বায়াস

লিংকে যুক্ত রিপোর্টটি খুব ভালোভাবে লেখা। এর বিষয়বস্তু চীনের সীমান্ত সংলগ্ন ভিয়েতনামের উত্তর-পশ্চিম এক গ্রাম হতে মেয়েদের চীনে পাচার হবার কাহিনী। এখানে কয়েকটা বিষয় খেয়ালে রাখার মত, যা খেয়ালে রাখলে আপনার জাজমেন্ট ও বুঝ ভালো হবে।

প্রথমত, টেকনোলজির খারাপ দিক। এই মেয়েদের পাচার করা হয় ফেইসবুকের মাধ্যমে। ফেইসবুক ব্যবহার করে প্রেম করা হয়। এরপর প্রেমিক বিয়ের কথা বলে নিয়ে বিক্রি করে দেয় বা প্রেমিকের লোকেরা বিক্রি করে দেয় চীনে। এই মেয়েদের বয়স ১৩-১৫।

দ্বিতীয়ত, অর্থনীতি বিরাট ফ্যাক্ট। এই অঞ্চল অতি দরিদ্র। তাই সামান্য টাকার জন্য ফেইসবুক প্রেমিকেরা এ কাজ করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে নিকঠ বন্ধু বা বন্ধু পরিবারও এমন পাচার করে মেয়েদের।

তৃতীয়ত, চীন ১৯৭৯ সালে এক বাচ্চার পলিসি করে। মাত্র একটা বাচ্চা নিতে পারবে কাপলেরা। চীনের কনফুসিয়ান সমাজে ছেলে বাচ্চার প্রাধান্য আছে। ফলে প্রচুর সিলেক্টিভ এবর্শন হয়েছে। এখন চীনে মেয়েদের চাইতে ছেলেরা অনেক অনেক বেশী। ২০২০ সালের মধ্যে চীনে বিবাহযোগ্য ছেলের সংখ্যা মেয়েদের চাইতে সংখ্যায় ৩০ মিলিয়ন বেশী হবে। পৃথিবীর আর কোথাও এমন অবস্থা নেই। এই সংখ্যা তারতম্যের কারণে চীনে গড়ে উঠেছে ব্রাইড মার্কেট। বউ বাজার। ভিয়েতনাম, মায়ানমার, লাওস ইত্যাদি দেশ থেকে তাই মেয়েরা পাচার হয়ে আসছে চাহিদা মেটাতে। চীনের ছেলেদের জন্য বিদেশী বউ কেনা লাভজনক, কারণ লোকাল বিয়ে করতে যৌতুক দিতে হয় এর চাইতে বেশী।

চতুর্থত, কোন তথ্য বেশী পাওয়া গেলে বা দেখা গেলে, আমাদের মনে হয় ঐ জিনিশ গুরুত্বপূর্ন। মস্তিষ্ক তখন জাজমেন্টে ভুল করে। যেমন, আইসের মাইয়াদের নিয়ে এমন বউ বানানো/বা দাসী বানানো’র নিউজ ব্যাপক প্রচার হয়। তাই আমাদের মনে হতে পারে হয়ত আইএসই বেশী এই কাজ করছে, এবং তাদেরটাই বেশী তীব্র। কিন্তু আমরা ইন্ডিয়ায় সিস্টেমেটিকভাবে পাচার হওয়া বাংলাদেশ বা নেপালের মেয়েদের অবস্থার কথা বা সংখ্যার কথা এসময় হিসাবে নেই না, যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। হিসাবে নেই না পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা স্লেভ-যৌন মার্কেটের কথা।

গার্ডিয়ানে রিপোর্টটির লিংক এখানে

মুরাদুল ইসলাম